মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ২২৯ জন শ্রমিকের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া উপজেলার ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
এ বিষয়ে র্দীঘদিন পর ওই টাকা ফেরত পেতে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান সদস্যরা ৫ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে ধল্লা ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ২২৯ জন শ্রমিকের বিপরীতে ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমিকের নামে অগ্রণী ব্যাংক ধল্লা বাস্তা বাসস্ট্যান্ড শাখায় হিসেব নম্বর খোলা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৪০ কর্মদিবস। দৈনিক মজুরির ২০০ টাকা থেকে ৫০ টাকা সঞ্চয়ের জন্য শ্রমিকের একাউন্টে জমা করে বাকি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। প্রত্যেক শ্রমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮০ দিনে চার হাজার টাকা সঞ্চয় ব্যাংকে জমা হয়। এতে করে ২২৯ জন শ্রমিকের প্রায় আট লাখ ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় শ্রমিকদের নিজ নিজ একাউন্টে জমা হয়। শ্রমিকরা গরীব হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শেষ হলে প্রকল্প সভাপতি মেম্বাররা নিজ তহবিল থেকে শ্রমিকের সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করেন। যা পরবর্তীতে মেম্বাররা শ্রমিক দ্বারা একাউন্ট থেকে তাদের টাকা নিয়ে নেবেন। কিন্তু সঞ্চয়ের টাকার খোঁজ নিতে গেলে ব্যাংক থেকে বলা হয় চেয়ারম্যান টাকা দিতে নিষেধ করেছেন। চেয়ারম্যান ব্যাংক কর্তাদের সঙ্গে গোপন আতাত করে নকল টিপসই ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করেন। এখন টাকা চাইলে একাউন্ট ক্লোজ করা হয়েছে টাকা উঠানো যাবে না বলে চেয়ারম্যান জানান। ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগ সাজসেই চেয়ারম্যান শ্রমিকদের এ টাকা উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেন।
অগ্রণী ব্যাংক বাস্তা শাখার ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা আজ পর্যন্ত টাকা নিতে আসেনি। শ্রমিকদের একাউন্টেই টাকা আছে। অন্য কেউ এই টাকা উত্তোলন করেনি।
তবে ব্যাংক ম্যানেজার মো. সুজাউদ্দিন বলেন, পর্যায়ক্রমে ২০২২ সালের ১৯ মে সর্বশেষ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আমার যোগদানের আগে হয়েছে তাই কিছুই জানি না।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, শ্রমিকদের টাকা ব্যাংকেই রয়েছে, তবে সম্ভবত অর্ধেক শ্রমিক টাকা উত্তোলন করেছেন। শ্রমিকরা আমার কাছে চেক আনলে আমি শুধু স্বাক্ষর করি। তাদের একাউন্টের টাকা আমি উত্তোলন করবো কিভাবে। এছাড়া এটা শ্রমিকদের বিষয় মেম্বারদের কিছু না।
ইউপি সচিব আলী হোসেন বলেন, শ্রমিকরা কোনো টাকা উঠায়নি। চেয়ারম্যান নিজেই টাকা উত্তোলন করেছেন। ব্যাংকম্যানেজ না হলে এটা সম্ভব হতো না।
এবিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, সঠিক তদন্ত করলে কোন শ্রমিকই খুঁজে পাওয়া যাবে না। সবকিছুতেই চেয়ারম্যানের কারচুপি।