পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি দেশটির অফিসিয়াল সিক্রেটস বিল-২০২৩ এবং পাকিস্তান আর্মি অ্যক্ট-২০২৩ নামক দুটি সংশোধনীতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছেন। রোববার নতুন এই দুটি বিলে স্বাক্ষর না করার কারণ হিসেবে আলভি বলেন, কর্মীরা তার আদেশ ক্ষুণ্ণ করেছে। খবর জিও নিউজের।
ঘটনার পর নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আলভি। পোস্টে তিনি বলেন, ‘খোদা আমার সাক্ষী, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যামেন্ডমেন্ট বিল-২০২৩ এবং পাকিস্তান আর্মি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল-২০২৩ এর সঙ্গে একমত না হওয়ায় আমি তাতে স্বাক্ষর করিনি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই প্রস্তাবনা বাতিল করার জন্য স্বাক্ষরবিহীন বিল আমি আমার কর্মীদেরকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে বলেছি। এই কাজ তারা ঠিকমতো করেছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি বারবার জিজ্ঞেস করেছি। তারা আমাকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে।’
স্বাক্ষর না করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তবে আমি আজ জানতে পেরেছি যে আমার কর্মীরা আমার ইচ্ছা এবং আদেশকে অবমূল্যায়ন করেছে। আল্লাহ সব জানেন, তিনিই ক্ষমা করবেন। তবে যারা ভুক্তভোগী হবেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।’
উল্লেখ্য, দুই পিটিআই নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশি এবং ইমরান খান ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক ফায়দা নিতে কূটনৈতিক সাইফার নথি প্রকাশ করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত হয়। এরপর তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাকিস্তানের সংসদ ৩১ জুলাই পাকিস্তান সেনাবাহিনী (সংশোধনী) বিল-২০২৩ পাস করে যার উদ্দেশ জাতীয় নিরাপত্তা বা সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কিত সংবেদনশীল কোনো তথ্য কেউ প্রকাশ করলে তাকে সম্ভাব্য পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা।
পৃথকভাবে, ৭ আগস্ট পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট গ্রিন সিগনাল পেয়েছিল। সিনেট এবং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি উভয় জায়গা থেকে বিল পাশ হওয়ার পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়। বিলগুলোতে স্বাক্ষর করার জন্য রাষ্ট্রপতি তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) থেকেও কঠোর সমালোচনা পেয়েছেন।
আর্মি অ্যান্ড অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট কী
আর্মি অ্যাক্ট পাকিস্তান বা সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা ও স্বার্থের প্রতি ক্ষতিকর বা ক্ষতিকর হতে পারে এমন কোনো সরকারি ক্ষমতায় অর্জিত কোনো তথ্য প্রকাশের জন্য দোষী ব্যক্তিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিবে।
এই আইনের সংশোধনীগুলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত অফিসার এবং কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এর মধ্যে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি কমিশন মঞ্জুর করার ক্ষমতা, চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ, কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা, জাতীয় উন্নয়ন কাজ এবং অন্যান্য অপারেশনাল ও প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের পুরাতন সংস্করণ এই আইন লঙ্ঘনকারীদের বা সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করার ক্ষমতা দেয়। সংশোধিত বিলে তা বাদ দেওয়া হয়েছে।