ফুটবলের বাতাসটা ভারী হয়ে গেছে। কথার চালাচালিতে সব ভাবনা যেন লণ্ডভণ্ড। এখন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দুয়ার খুলে দিয়েছে বাফুফে। কাজ করতে গেলে ভুল হয়। ভুল না হলে সংশোধনের সুযোগই বা কোথায়। এমন কথাই জানিয়ে গেলেন বাফুফের সহ সভাপতি আতাউর রহমান মানিক। আজ বিকালে বাফুফে জরুরি সভায় বসে। সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমকে মানিক জানালেন সম্প্রতি নারী ফুটবল ইস্যুতে ক্রীড়াঙ্গনে চলতে থাকা নানা সমালোচনা। বাফুফের সদস্যরা অনুভব করছেন যেন সবাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করি। কেউ যেন সমালোচনা না করে। এখানে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক কিভাবে কথা বলবেন। কোন বিষয়ে কিভাবে সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে ধরবেন। তা থেকে যেন ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি না হয়।
সভা শেষে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দূরত্ব প্রশ্নে আতাউর রহমান মানিক বললেন, ‘কোনো দূরত্ব নেই। আমরা বাফুফে এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এক সঙ্গে কাজ করছি। ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়। আমরা ভুল করলে, কোথায় ভুল হয়েছে, সেটা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংশোধন করে দেবে। এক সঙ্গে কাজ করাটাই আমাদের লক্ষ্য। এখানে কেউ কারো শত্রু না।’
বুধবার (১২ এপ্রিল) সভার মূল এজেন্ডা ছিল নারী ফুটবল। মিয়ানমারে প্যারিস অলিম্পিক বাছাই ফুটবলে খেলতে দল পাঠানো হয়নি। টাকা নেই বলে সরে গিয়েছিল। এই সমালোচনার ঝড়ে পড়েছিল বাফুফে। মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চেয়েছিল কিন্তু মন্ত্রণালয় বলেছে হাতে সময় দেয়নি। সময় না দিয়েই তারা টাকা চেয়েছে। সরকারের টাকা পেতে একটা নিয়ম আছে। আর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল জানিয়েছিলেন বাফুফের তাদের দায়ভার মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপাচ্ছে। বাফুফে বলছে তারা টাকার জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছিল দল। তখন যদি তারা একটা আশ্বাস দিত তাহলে সমস্যা হতো না। টাকা পরে দিলেও বাফুফে কাজ চালিয়ে নিত। এসব কিছু সব মাটি দিয়ে নারী ফুটবলে নতুন পথ খোঁজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এই পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় তার জন্য বাফুফের আজকের সভা। কারণ সামনে নারী ফুটবলে আরো অনেক খেলা রয়েছে বলে জানান আবু নাইম সোহাগ।
এখন থেকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে আগে-ভাগে টাকা চাইবে বাফুফে। নারী ফুটবলে এই বছরের জন্য একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি মাসে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল খেলা রয়েছে। যদি বাংলাদেশ বাছাই পর্ব পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে তার জন্য কতো টাকা লাগবে। আগামীতে ফিফা উইনডোতে ম্যাচ রয়েছে। ৬টা ম্যাচ খেলতে চায় বাংলাদেশ। সেখানেও দল পাঠাতে অনেক খরচ হবে। সব কিছু মিলিয়ে বাফুফে ৮ কোটি টাকা লাগবে। সঙ্গে এটাও দেখেছে বছরের বাকিটা সময় তাদের সম্ভাব্য আয় কতো হতে পারে। এএফসি, ফিফা, জেএফএ মিলিয়ে সাড়ে ৫ কোটি টাকা থাকবে। ঘাটতি হবে আরো প্রায় তিন কোটি টাকা। টাকার জন্য মন্ত্রণালয়কে আগেই জানিয়ে রাখবে বাফুফে। এমন কথা জানিয়েছেন বাফুফের সহসভাপতি আতাউর রহমান মানিক।
বাফুফের সদস্য আমের খান বললেন, ‘মেয়েরা যাবে না এটা সবাই মিলে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিলে আমরাও কোথায় বলতে পারতাম না যে জানি না। এখন যে সভাটা হলো লন্ডন হতে নাবিল ভাই যোগ দিয়েছেন, সিলেট থেকে মাহি ভাই ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ আরো ভেবে কথা বলবেন এবং তাকেও কর্মচারি বলাটাও সমীচিন হয়নি। বলতে গেলে সেও ফিফার কর্মকর্তা।’