দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ি অধ্যুষিত এলাকায় দুই সপ্তাহের প্রবল বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৫৫ জন নিহত এবং এক লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোববার (১৩ আগস্ট) বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া চারটি জেলার প্রশাসকরা জানিয়েছেন, ১ আগস্ট থেকে বন্যা ও ভূমিধসে কক্সবাজারে ২১ জন, চট্টগ্রামে ১৯ জন, বান্দরবানে ১০ জন এবং রাঙ্গামাটিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান আজিজুর রহমান জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে এসময়ে। তিনি বলেন, ‘শুধু ৭ আগস্টেই ৩১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’
প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ১১ আগস্ট পর্যন্ত ওই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে নদীগুলোর তীর ভেঙ্গে শত শত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি কমা শুরুর পর নিহতদের খবরা-খবর নিশ্চিত করা যাচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রায় ৬ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে।’
আকস্মিক এ বন্যায় বন্দর নগরী চট্টগ্রামে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতার। বাসিন্দারা বলছেন, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারী এ বন্যা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘বন্যায় অন্তত ৫,০০০ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে বন্যার পানি কমার পর আমরা সাঙ্গু নদী থেকে কিছু লাশ উদ্ধার করেছি।’
তিনি জানান, বন্যায় ও বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে কয়েকদিনের জন্য যোগাযোগও বন্ধ ছিল এবং নতুন স্থাপন করা রেলপথও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন জানান, অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে এ বন্যায়।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় পাঁচজন নিহত হয়েছে, যেখানে ভারী বর্ষণে প্রায় ২৩,০০০ মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রামের সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা জানান, বন্যার পর এখনো পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। এএফপি,দ্যহিন্দু