খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোর থেকেই বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলকে ‘উদাহরণ’ হিসেবে নিয়ে মেয়র প্রার্থীরা কেসিসি নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। বিশেষ করে গাজীপুরের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দেশের তৃতীয় বৃহত্তম খুলনা সিটি নির্বাচনে জয় আওয়ামী লীগের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
একটু অবহেলায় যদি গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মতো ফলাফলে বিপর্যয় নেমে আসেÍএই আতঙ্কে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক গণসংযোগে কোনো রকম অবহেলা করছেন না। ভোর থেকেই তিনি নেমে পড়ছেন প্রচার-প্রচারণায়। নির্বাচনের দিন ভোটাররা যাতে আগেভাগে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেন গণসংযোগকালে সেই আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। এত কিছু সত্ত্বেও ভোটের যে মূল প্রাণ সেই ভোটারদের মধ্যে এবারের কেসিসি নির্বাচন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই। কারণ এবারের ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি তারাই নেই নির্বাচনের মাঠে। আর এই সুযোগটিই নিতে চাচ্ছেন আওয়ামী লীগ বিরোধী মেয়র প্রার্থীরা। তবে, তার জন্য আগামী ১২ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
গতকাল সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শিপইয়ার্ড, লবণচরা স্লুুইসগেট ও রিয়া বাজার এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের দিন সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
তালুকদার আব্দুল খালেক গণসংযোগকালে গণমাধ্যমের কর্মীসহ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, খুলনার নির্বাচনে অতীতেও আমরা কোনো অবস্থাতেই হস্তক্ষেপ করিনি। এবারেও কোনো হস্তক্ষেপ হবে না। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন বলতে যা যা বোঝায় এবার সেই নির্বাচন হবে। আমি এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে বলছি, কেউ কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
বিকালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে গণসংযোগ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি আইডিইবিতে প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু সকালে নগরীর স্টেশন রোড, বাদামতলা, বড় বাজারসহ ২১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, হামলা-মামলা দিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। যেন তারা ভোটকেন্দ্রে না যায়।
বিকালে শফিকুল ইসলাম মধু নগরীর বয়রার বাস্তুহারা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আওয়াল নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার ১৭ ও ১৮ ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় হাতপাখা মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
এ সময় তিনি বলেন, হাতপাখা মার্কায় আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করলে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমান নাগরিক সেবা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে আমরা কাজ করব।
এদিকে কেসিসি নির্বাচনে তিন মেয়র প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা চালালেও জাকের পার্টির প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেনের এখনো দেখা মেলেনি।