ঘটনার দুই দিন অতিবাহিত হলেও এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ভোলার মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২। তবে ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে এসেছে সাগর বধূ-৩, সাগর বধূ-৪ ও সাগর নন্দিনী-৩ নামে তিনটি জাহাজ এবং দুটি বার্জ। পদ্মা অয়েল কোম্পানির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ উদ্ধার অভিযান চলছে।
এদিকে, ডুবন্ত জাহাজ থেকে মেঘনায় ছড়িয়ে পড়ছে তেল। পানির ওপর জ্বলজ্বল করছে তেলের স্তর। মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করতে পারছে না জেলেরা। তারা তেলের ঝাঁজে নাকাল হয়ে পড়েছেন। মেঘনার তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা গত দুই দিন যাবত্ এই নদীর পানি ব্যবহার করছেন না। ঘটনার পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি বিআইডব্লিউটিএ, একটি পেট্রোবাংলা অন্যটি গঠন করেছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি। এ তিন তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করতে আসা জেলে মো. রুবেল জানান, গত দুই দিন ধরে তেলের ঝাঁজের কারণে তিনি মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাকে দৌলতখান উপজেলা-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করতে হচ্ছে। তুলাতলী মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, তিনি সবসময়ই মেঘনা নদীতে গোসল করতেন। কিন্তু আজ দুই দিন ধরে তিনি নদীতে গোসল করতে পারছেন না।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ-সংরক্ষণ পরিচালক ও পরিচালন বিভাগের মো. শাহাজাহান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত সাগর নন্দিনী-২ মেরিন আইন ভঙ্গ করেছে। জাহাজটির প্রকৃত চালক জাহাজে ছিলেন না। মেরিন আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় সাগর নন্দিনী-২-এর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। যে জাহাজ বা বোট সাগর নন্দিনী-২ কে ধাক্কা দিয়েছে সেটাকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ, রবিবার ভোররাতে ভোলা সদর উপজেলার তুলাতলী মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে তেলবাহী জাহাজ ‘সাগর নন্দিনী-২’-এর সঙ্গে নোঙর করা আরেকটি জাহাজের সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে সাগর নন্দিনী জাহাজটির পিছনের তলা ফেটে পানিতে নিমজ্জিত হয়। জাহাজে থাকা মাস্টারসহ ১৩ নাবিককে জীবিত উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। মেঘনার পানিতে ভেসে যায় ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল।