জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দেশে প্রতি বছর সাত জনে এক জন বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। এসব বাস্তুচ্যুতির ঘটনায় কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—বলে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয় এসব কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের ঝুঁকি থেকে উত্তরণের জন্য ‘স্পিরিট’ নামক এক প্রকল্প শুরু করেছে উন্নয়ন সংস্থা ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স।
সম্প্রতি রাজধানীর পল্লবীর একটি মিলনায়তনে এ উপলক্ষ্যে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংগঠন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃতী খেলোয়াড় ও সংগঠক বাংলাদেশের সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু, টেরে দেস হোমসের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জাহিদুর মোহাম্মদ রহমান, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদিকা প্রকৌশলী ফিরোজা করিম নেলী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন ও জাতীয় হ্যান্ডবল দলের সাবেক অধিনায়ক রোজিনা খাতুন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের উপপরিচালক ড. মো. তারেকুজ্জামান।
ড. মো. তারেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে এবং এ বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি সংগঠন হিসেবে বিটিএস ১৯৯৪ সাল থেকে কাজ করে আসছে। সংগঠনের লক্ষ্য হলো সহযোগিতা প্রদানকারী এবং গ্রহীতা উভয় পক্ষকে সংবেদনশীল এবং সক্ষম করা ,যাতে শিশু এবং নারীদের সব প্রকার নির্যাতন ও অধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করা যায় এবং তাদের সহজাত বিকাশের সম্ভাবনার প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়।
অলিম্পিক রিফিউজি ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং টিডিএইচ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এ প্রকল্পটি ঢাকার বাউনিয়াবাঁধ এবং বেগুনটিলা (৫ নং ওয়ার্ড ও ২নং ওয়ার্ড) এবং কুড়িগ্রামে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিন বছর মেয়াদি (এপ্রিল ২০২২ থেকে মার্চ ২০২৫) এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ হাজার (৬০ ভাগ ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের এবং ৪০ ভাগ ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সের) কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া হবে। পাশাপাশি মাদকাসক্তিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার ঝুঁকি, বাল্যবিবাহ ও গুম, নির্যাতনের ঝুঁকি, শিশু শ্রম ও বেকারত্ব দূরীকরণেও কাজ করা হবে। রোকসানা সুলতানা বলেন, কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ততার ঝুঁকি থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য।
এ প্রকল্পটি কিশোর-কিশোরী এবং তরুণদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ, প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, জীবন দক্ষতার উন্নয়ন, নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নিজেদের স্থানীয় সমস্যাসমূহ সৃষ্টিশীলভাবে সমাধানের সক্ষমতা তৈরি করা হবে।