করোনার মতো ধীরে ধীরে বাড়ছে নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এ নিয়ে আতঙ্কিত নারায়ণগঞ্জবাসী। তবে খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেছেন, ঢাকার মতো নারায়ণগঞ্জে রোগীর সংখ্যা নেই। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে গেলে তিনি এ অনুরোধ জানান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে পুরুষ, নারী ও শিশুসহ তিনটি ওয়ার্ডে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২০। নিবিড় পরিচর্যায় চলছে এই সব রোগীর চিকিৎসা। এদের অধিকাংশ সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, জালকুড়ি, লালপুর, আমলাপাড়া ও ফতুল্লা এবং মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা। গত শুক্রবার মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে এসে হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন আব্দুস সামাদ। এর আগে তিনি মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে ভর্তি হন। লালপুর থেকে রাসেল নামে এক রোগী এসে পাঁচ দিন আগে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকদের সেবায় এখন অনেকটা সেরে উঠেছেন বলে রাসেল জানান।
হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাসার জানান, নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি নয়। সদরের মধ্যে ফতুল্লা, ঝালকুড়ি, চিটাগং রোড, সিটি করপোরেশনের কিছু রোগী আছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি জানান, হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা ডেঙ্গু রোগীর ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীর চিকিৎসার জন্য স্যালাইন, ওষুধ সবকিছুই পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুত আছে। মাঝে মাঝে কিছু সরঞ্জামের সংকট হলেও অন্য পরীক্ষাগুলো সব সময় চলমান। তিনি আরও জানান, গত ১৩ জুন থেকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়া শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। গতকাল পর্যন্ত ভর্তি আছে ২০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, নারী দুই জন ও শিশু তিন জন।
এদিকে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা গুরুত্ব সহকারে করা হলেও হাসপাতালের ৩০০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যা করার নির্মাণকাজের কারণে অনেক জায়গায় পরিত্যক্তভাবে পড়ে আছে হাসপাতালের ফার্নিচার। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা বেহাল। শিশু ওয়ার্ডের জানালাসংলগ্ন স্থানে বংশবৃদ্ধি পাচ্ছে এডিস মশা।
এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার জানান, ‘নির্মাণকাজের কারণে হাসপাতালের অনেক পরিত্যক্ত ফার্নিচার পড়ে আছে। এগুলো সরকারি মালামাল, যা আমাদের বিক্রি বা অন্যত্র সরানোর এক্তিয়ার নেই। এর জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করেছি সরকারের কাছে। যদি সরকার অনুমতি দেয়, তাহলে এগুলো নিলামে তোলা হবে। নির্মাণকাজের জন্য ড্রেনেজ অবস্থা বন্ধ আছে। কাজ শেষ হলেই মাস্টার ড্রেন হবে। আর তা হতে এক বছর সময় লাগবে।’