তাহলে কি সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সৌদি আরবের প্রো লিগেই নাম লেখাতে যাচ্ছেন লিওনেল মেসি? গত ৩১ ডিসেম্বর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে নাম লেখানোর কদিন পরপরই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে মেসিও পাড়ি জমাতে যাচ্ছেন সৌদি আরবে। যোগ দেবেন সৌদি প্রো লিগের দল আল হিলালে। সেই গুঞ্জন নতুন করে ডালপালা ছড়িয়েছে বর্তমানের এক ঘটনার। পিএসজির কোচের নিষেধ সত্ত্বেও সপরিবারে সৌদি আরবে এসেছেন বিশ্বকাপ জয়ী মেসি।
গত রবিবার ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে লঁরিয়ের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল পিএসজির। নিজেদের ঘরের মাঠের গুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচে ১-৩ গোলে হেরেছে মেসি-এমবাপ্পেদের পিএসজি। ঐ ম্যাচ শেষেই সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফার গালতিয়ের ও ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালক লুইস কাম্পোসের কাছে অনুমতি চান মেসি। মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময় বিবেচনায় কোচ গালতিয়ের ও ক্রীড়া পরিচালক লুইস কাম্পোস মেসিকে সৌদিতে যাওয়ার অনুমতি দেননি। কিন্তু তাদের নিষেধ সত্ত্বেও সপরিবারে সৌদি আরবে এসেছেন মেসি। ফ্রান্সের জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী পত্রিকা ‘লেকিপ’ অন্তত তেমনটাই জানিয়েছে।
গণমাধ্যম সূত্রেই খবর কোচ-ক্রীড়া পরিচালক অনুমতি না দিলেও পিএসজির শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই সৌদি আরবে এসেছেন মেসি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মেসি কেন কোচের বারণ সত্ত্বেও মৌসুমের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সপরিবারে সৌদি আরবে বেড়াতে এসেছেন? প্রকাশ্য কারণ, মেসি সৌদি আরবের পর্যটন শুভেচ্ছা দূত। সৌদির পর্যটন শিল্পের প্রচার-প্রসার ঘটাতে মেসি গত বছরও একবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে এসেছিলেন। এবারও সেই কাজেই এসেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এটা কি মেসির সৌদিতে আসার জন্য আদর্শ সময়? পেশাদারি দৃষ্টিতে কোনোভাবেই এটা আদর্শ সময় নয়। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শেষের পথে। লিগ শিরোপা জয়ের পথে সামনের সময়টা পিএসজির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে কথা মাথায় রেখেছে পিএসজির কোচ, ক্রীড়া পরিচালক মেসিকে মানা করেন। কিন্তু তাদের বারণ সত্ত্বেও সপরিবারে মেসির সৌদিতে আসা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলো মেসির সমালোচনায় মুখর। পরের ম্যাচের জন্য কিলিয়ান এমবাপ্পে, মারকুইনহোস, নেইমাররা যখন ক্লাবের অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন, মেসি তখন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সৌদি আরবের চিড়িয়াখানা-পার্কসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ফুর্তি করে বেড়াচ্ছেন।
তার এভাবে সৌদিতে আসায় প্রশ্ন উঠেছে, শুধু কি পর্যটন দূত হিসেবে কাজ করতেই এই সময়ে সপরিবারে সৌদিতে মেসি? না কি পেছনে অন্য কারণও আছে। অন্য কারণটা কি, তা ফুটবলপ্রেমীদের জানাই। চুক্তির বিশ্ব রেকর্ড গড়েও মেসিকে দলে পেতে চায় সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। সৌদি আরবেরই আরেক ক্লাব আল ইত্তিহাদও আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে পেতে চায় বলে গুঞ্জন আছে। পিএসজির সঙ্গে মেসির চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে। কিন্তু এখনো চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মৌসুমে মেসির ঠিকানা হবে নতুন কোথাও।
সেটা কোথায়? বার্সেলোনা, যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের দল ইন্টার মায়ামিসহ অনেক ক্লাবের কথাই শোনা যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে পরিবার নিয়ে মেসির সৌদি আরবে আসায় আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি গুঞ্জনের বিষয়টিই উঠে আসছে। তবে কি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এই অসময়ে সৌদিতে মেসি?