আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৮১ মিনিটের মাথায় কোচ জ্বালাতক দালিচ তাকে তুলে নেন। কিন্তু লুকা মডরিচ কোনোই প্রতিক্রিয়া দেখালেন না। বরং মাঠ থেকে উঠার সময় দর্শকদের উদ্দেশ্যে হাততালি দিলেন। ডাগআউটে বসার সময় সবার সঙ্গে হাত মেলালেন। পুরো ক্যারিয়ারে শান্ত-ভদ্র হিসেবেই সুনাম কুড়িয়েছেন মডরিচ।
ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ককে গতবার ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপ বিসর্জন দিতে হয়েছিল। রানার্সআপ ট্রফি হাতে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল মডরিচকে। তবে ঐ ম্যাচই ছিল ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ইতিহাসের সেরা সাফল্য।
কাতার বিশ্বকাপে এবার শুরু থেকেই ক্রোয়েশিয়াকে ফুটবলবোদ্ধারা গোনায় রাখেনি। তবে থেমে থাকেনি ক্রোয়েটরা নীরবে তাদের কাজের কাজ ঠিকই করে গিয়েছে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছেন মডরিচ। মাঝমাঠ থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বড় অবদান তারই। শেষ চারে উঠতে মডরিচের অবদান কম নয়। কিন্তু মডরিচসহ বাকি খেলোয়াড় কিংবা ক্রোয়েশিয়া দল সেভাবে কিন্তু আলোচনায় ছিল না। কিন্তু সেমিফাইনালে পৌঁছে ঠিকই আলোচনায় এসেছে ক্রোয়েশিয়া। দুর্ভাগ্য ক্রোয়েটদের আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে সেমিফাইনাল থেকে। তবে গতবার গ্রুপ পর্বে এই আর্জেন্টিনাকেই ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া।
৩৭ বছর বয়সি মডরিচের এটাই যে শেষ বিশ্বকাপ সেটি বলতে ফুটবলযোদ্ধা হওয়ার দরকার নেই। মরক্কোর বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণি ম্যাচটিই তার শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ হতে চলেছে। আগামী বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না তাকে। তাই সতীর্থরা বিদায় বেলায় মডরিচকে জয়ই উপহার দিতে চাইবে।
এর আগে ২০০৬ সালে তুমুল প্রতিভা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রেখেছিলেন মডরিচ। ক্রোয়েশিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার হয়েই বিদায় বলতে চলেছেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন এ ক্রোয়েট তারকা। পাঁচ বার জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিন বার স্প্যানিশ লিগ এবং চার বার ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছেন। বিশ্ব জয়ের আক্ষেপ থাকলেও ২০১৮ বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্সের কল্যাণে জিতেছেন ব্যালন ডি’অর পুরস্কার। নিঃসন্দেহে সেরা মিডফিল্ডারদের সঙ্গে মডরিচের নামটাও থাকবে একই কাতারে।