সিলেটের পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে গত কয়েক মাস ধরেই। চলতি বোরো মৌসুমে জ্বালানি তেলের সংকটে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে আবার দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে গ্যাসের সংকট চলায় সিএনজিচালিত যানবাহগুলো পড়েছে মহাবিপাকে। সারাক্ষণ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে থাকে দীর্ঘ লাইন। লাইন দিয়েও সিএনজি পাওয়া যায় না। সরবরাহের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় ফিলিং স্টেশনগুলো। অনেক সময় চালকেরা সারা রাত জেগে সিএনজি সংগ্রহ করে ভোরে গাড়ি চালন ঘুমকাতর অবস্থায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
দীর্ঘদিন ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আগামী বুধবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে ডিপো থেকে তেল উত্তলন বন্ধ থাকবে। রবিবার (২২ জানুয়ারি) সিলেটর সব পাম্প অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পেট্রোলপাম্প অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটি। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন স্থানীয় পরিশোধনাগার বন্ধ থাকা, রেলের ওয়াগনের সংকট এবং শীত মৌসুমে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ায় সংকট আরো তীব্র হয়েছে।
‘জ্বালানি তেলের সংকট নিরসনে সিলেটের পরিশোধনাগারগুলো চালুর দাবিতে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু ‘নানা অজুহাতে বন্ধ রাখা হয়েছে শোধনাগারগুলো’—এই মন্তব্য করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভৈরব থেকে নিজ খরচে ট্যাংক-লরি ভাড়া করে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করছেন। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। সরবরাহ কম থাকায় বিভাগের সব পেট্রোল পাম্প কম তেল নিয়ে চলছে।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে, সেখানে সরবরাহ হচ্ছে ২ লাখ লিটার। তাও দুই-তিন দিন পর পর। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি সংকট ডিজেলের।
জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, বারবার সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো সমাধান আসেনি। তাই আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছি।’