ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি তেলবাহী জাহাজে আগুনে চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও পাঁচ শ্রমিক। আহতদের মধ্যে দুইজনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য দুজনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে আগুন লেগে এ বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিস্ফোরণে জাহাজটির পেছনের অংশ পুরোটাই উড়ে গেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বা ইঞ্চিন বিস্ফোরণ হতে পারে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণ করে দগ্ধদের উদ্ধার করেছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের এখনো সন্ধান চলছে। ঝালকাঠি সদর, রাজাপুর, নলছিটি ও বরিশাল সদরের ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর দুইটার দিকে জাহাজের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে ওই রুমে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এতে জাহাজের ৯ স্টাফের মধ্যে চার জন শ্রমিক দগ্ধ হয়। দগ্ধরা হলেন, জাহাজের স্টাফ শাকিল (৩৫), ফরিদুল ইসলাম (৫০), ইকবাল হোসেন (২৭) ও মাইনুল ইসলাম হৃদয় (২৯)। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতেদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
ঝালকাঠি পদ্মা ডিপোর ডিএস হোসেন আহম্মেদ জানান, এখন পর্যন্ত কোনো নিহতের খবর পাওয়া না গেলেও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে জাহাজের ভেতরের পানি অপসারণের জন্য ফায়ার সার্ভিসকে বলা হয়েছে। যাতে জাহাজটি ডুবে না যায়।
ঝালকাঠি পদ্মাা অয়েল কোম্পানির কর্মী আবদুস সালাম জানান, সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটি প্রায় ১১ লাখ লিটার পেট্রোল এবং ডিজেল নিয়ে ঝালকাঠির পদ্মা অয়েল কোম্পানির সামনে সুগন্ধা নদীতে নোঙর করে। শনিবার (১জুলাই) বিকালে জাহাজটি দিয়ে তেল খালাস করার কথা ছিল। শনিবার দুপুরে ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে জাহাজটির ইঞ্জিন রুমের তলা ফেটে আস্তে আস্তে ডুবে যাচ্ছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. সেলিম হোসাইন জানিয়েছেন, জাহাজে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার শেষে এখন নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছে তারা।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম, জেলা পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুহিতুল ইসলাম।
ঝালকাঠির সহকারী পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. মহিতুল ইসলাম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখন পর্যন্ত ৫ জন নিখোঁজের খবর জানা গেছে। আরও কজন আহতকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।