ব্রাজিলের সেনাপ্রধান জুলিও সিজার দা আররুদাকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। দেশটির সামরিক সূত্রের বরত দিয়ে শনিবার (২১ জানুয়ারি) এ তথ্য জানায় গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মাসের শুরুতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর সমর্থকদের দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাপ্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। জুলিও প্রেসিডেন্ট হিসেবে বলসোনারোর মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে ৩০ ডিসেম্বর সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন।
জানুয়ারির শুরুতে নতুন প্রেসিডেন্ট লুলার প্রশাসন জুলিওর নিয়োগ নিশ্চিত করে। জুলিও এখন ব্রাজিলের দক্ষিণ পূর্ব সেনাবাহিনীর কমান্ডার টমাস রিবেইরো পাইভা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবেন। দেশটির গ্লোবোনিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর গত শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন লুলা। জুলিও এই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
লুলা একজন বামপন্থী সাবেক ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। তিনি গত বছরের অক্টোবরে ব্রাজিলের নির্বাচনে অতি-ডানপন্থী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে পরাজিত করেছিলেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি লুলা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন।
৮ জানুয়ারি হাজার হাজার বলসোনারো সমর্থক দেশটির কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবন দখল করে। তারা হামলা ও ভাংচুর করে। এই দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লুলা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বলসোনারোর সমর্থকদের বিক্ষোভ দমন করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ব্রাজিলের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছেন। এই ঘটনার জেরে প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন।
সর্বশেষ সেনাপ্রধানকেও বরখাস্ত করেন তিনি। দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে, লুলা সামগ্রিক পরিবেশের একটি গভীর পর্যালোচনা ঘোষণা করেছিলেন। বলসোনারোর প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য সামরিক উপস্থিতি ছিল।
এ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট লুলার সবচেয়ে বড় তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি হবে ব্রাজিলের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক।
সেনাপ্রধান হওয়ার প্রাক্কালে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) টমাস অঙ্গীকার করেন, ব্রাজিলের সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা দেবে। নির্বাচনের ফলাফল সবাইকে মেনে নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।