মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিকে বলা হয় এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি। এই বস্তিতেই হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা ‘স্লামডগ মিলিওনিয়ার’ এর শুটিং হয়েছিল। সম্প্রতি আদানির রিয়েল এস্টেট গ্রুপ বস্তিটি অধিগ্রহণের জন্য অনুমতি পেয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬২০ একরেরও বেশি এলাকা জুড়ে এই বস্তিটি বিস্তৃত। প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস এখানে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে বস্তিটি আর বস্তি থাকবে না। সেখানে স্বপ্নের ‘শান্তি শহর’ গড়তে চলেছেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি। তবে এরইমধ্যে উচ্ছেদের মুখে থাকা বস্তির অসংখ্য মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মুম্বাই মেট্রোপলিটনের এক প্রতিনিধি জানান, মহারাষ্ট্র সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বস্তির দায়িত্ব আদানি গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছে। সংস্থাটির আওতায় ওই বস্তিতে ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করে একটি নতুন শহর গড়ে তোলা হবে। তবে মহারাষ্ট্র সরকার বস্তিটি সরাসরি আদানি গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেনি। এর জন্য নিলাম ডাকা হয়েছিল এবং সেখানে ৫ হাজার ৭০ কোটি রুপি ভিত্তি মূল্যে সবাইকে টেক্কা দিয়ে দায়িত্ব পেয়েছে আদানি গ্রুপ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৫০ বছরেরও বেশি পুরনো এই বস্তিতে প্রায় দেড় লাখ কুঁড়েঘর এবং ১৫ হাজার কুটির শিল্প রয়েছে। বস্তিটির কাছাকাছি অসংখ্য শপিং কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এছাড়া আদানি গোষ্ঠীর পরিচালিত ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটিও এখান থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে।
বস্তিটি অধিগ্রহণের মাধ্যমে আদানি গ্রুপ মুম্বাইয়ের বৃহত্তম বাণিজ্যিক জমির মালিক হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। বহু বছর ধরেই মুম্বাই কর্তৃপক্ষ বস্তিটির উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে আসছিল।
এদিকে এলাকাটি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার মুখোমুখি হয়েছে বলে জানায় আদানি গ্রুপ। ধারাবি বস্তিগুলিকে রূপান্তরিত করার এই প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত আদানি গ্রুপের বৃহত্তম আবাসন উদ্যোগ হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ১৭ বছর পর এই প্রকল্প থেকে আদানি গ্রুপ যে পরিমাণ আয় করবে তা বিনিয়োগের চেয়ে বহুগুণ বেশি হবে এবং প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হলেই আদানি গ্রুপের উপার্জন হবে ৬ লাখ কোটি।