দীর্ঘ ৪৭ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদে অভিযান শুরু করল রাশিয়া। এ অভিযানে চাঁদের দক্ষিণ অংশে পানির অস্তিত্ব অনুসন্ধান করবেন রুশ বিজ্ঞানীরা। রাশিয়ার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে মস্কো থেকে ৫ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভস্তোচনি কজমোদ্রোম মহাকাশকেন্দ্র থেকে লুনা-২৫ মহাকাশযানকে বহনকারী একটি সইয়ুজ ২ দশমিক ১ ভি রকেট চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়। রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস এ দৃশ্য সরাসরি দেখিয়েছে।
রাশিয়ার এই যান পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছাবে। এর তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে যানটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করার জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে নেবে। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থার প্রধান ইউরি বরিসভ আশা প্রকাশ করেন যে, মহাকাশযানটি আগামী ২১ আগস্ট চাঁদে অবতরণ করবে। ছোট একটি গাড়ির আকারের লুনা-২৫ নামের মহাকাশযানটি প্রায় এক বছর ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গবেষণা চালাবে। এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার কর্মকর্তারা বরফ হয়ে থাকা পানির উত্স চিহ্নিত করেছেন।
লুনা-২৫ অভিযানের ওপর রাশিয়া বেশ বড় আকারের বাজি ধরেছে বলা চলে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত বিধিনিষেধ, যার অনেকগুলোই রুশ উড়োজাহাজ ও মহাকাশ খাতের বিরুদ্ধে সেগুলো রুশ অর্থনীতির ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি। এই অভিযানের সাফল্যের ওপর এসব দাবির সত্যতা অনেকটাই নির্ভর করবে। কয়েক দশক ধরে রাশিয়া এই অভিযানের পরিকল্পনা করছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা করার পর মহাকাশ অভিযান নিয়ে বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে রুশ সহযোগিতার অবসান ঘটে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই অভিযান পরিচালনা করছে রাশিয়া। ১৯৭৬ সালের পর রাশিয়ায় প্রথমবারের মতো মহাকাশযান পাঠিয়েছে। গত মাসে ভারত চন্দ্রযান-৩ অভিযান শুরু করেছে। রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, ভারতের মহাকাশযান চাঁদে পৌঁছানোর আগেই লুনা-২৫ চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করতে সক্ষম হবে। ১ দশমিক ৮ টন ওজনের লুনা-২৫ মহাকাশযানে ৩১ কেজি ওজনের বৈজ্ঞানিক উপকরণ আছে। মহাকাশযানটি চাঁদের পৃষ্ঠের ১৫ সেন্টিমিটার গভীর পর্যন্ত পাথরের নমুনা সংগ্রহ করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হবে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনও চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশে মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা করছে। —উইওন নিউজ