রংপুর জেলায় পাঁচ শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এ কারণে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কাজে চরম অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ অথবা পদোন্নতি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বহুবার লিখিতভাবে জানানোর পরেও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষকদের।
রংপুর জেলা প্রাথিমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা হচ্ছে ১ হাজার ৪৫৫টি। এর মধ্যে ২৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। অন্যদিকে ৩০২টি স্কুলে সহকারি শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে কাউনিয়া উপজেলায় ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। গঙ্গাচড়া উপজেলায় ১৯ জন, তারাগজ্ঞ উপজেলায় ৪১জন, পীরগঞ্জে ১৩ জন, পীরগাছায় ৩৫ জন, বদরগঞ্জে ৩৩জন, মিঠাপুকুরে ৫৩ জন এবং সদর উপজেলায় ২৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এতে করে প্রধান শিক্ষকের অভাবে পাঠদানসহ প্রশাসনিক কাজকর্মে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেছেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রথমত, একজন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দ্বিতীয়ত, স্কুলের বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ভালোভাবে করা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ১৩ বছর ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কিংবা পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। তার ওপর প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন অনেকে মৃত্যু হয়েছে। সেই শূন্যস্থানও পুরণ করার কোনো উদ্যেগ নেই। এ জন্য প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে তারা জানান।
রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একে এম শাহাজাহান সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও পদোন্ননি বন্ধ রয়েছে। এই ১৩ বছর ধরে নতুন করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বা পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। রংপুর জেলায় তিন শতাধিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে করে বিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পুরো বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা সম্ভাব্য প্রধান শিক্ষকের তালিকা তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। এখন আমাদের আর করার কিছুই নেই।