সাভারের আশুলিয়া এলাকায় প্রায় এক বছর ধরে লেগুনা চালাচ্ছেন মুক্তি রানী। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ভাই ও বাবার অনুপ্রেরণায় লেগুনা চালান তিনি। দিনে যাত্রীভেদে কোনো দিন ৫০০ টাকা আবার কখনো আরও কম বা বেশি টাকা আয় করেন তিনি। তবে বাস চালানোর স্বপ্ন দেখেন লেগুনাচালক মুক্তি রানী।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মুক্তি রানী। অভাবের কারণেই তার বাবা সাভারে চলে এসেছিলেন। কিশোর বয়স থেকে প্রায় ১৫ বছর গার্মেন্টসে কাজ করার পর তিনি হাতে তুলে নেন স্টিয়ারিং।
গাড়ি চালানোর জন্য মুক্তি রানী ভোরে বের হন। যাত্রী খোঁজা, ভাড়া তোলা সবই করেন লেগুনাচালক মুক্তি রানী। চালকের আসনে বসেই যাত্রীদের ডাকতে থাকেন তিনি।
পেশা হিসেবে নারীদের কতটা চ্যালেঞ্জ এমন প্রশ্নের জবাবে ইত্তেফাক অনলাইনকে মুক্তি রানী বলেন, ‘এই পেশায় সাহস করে মেয়েরা আসতে পারে না। গার্মেন্টসে চাকরি করে আমি অনেক হয়রান হয়েছি। আমি ভাবলাম এই পেশায় তো মেয়েরা নেই। হঠাৎ করে আমার মাথায় আসলো আমি এটা করি।’
যাত্রীদের কেমন সাড়া পাওয়া যায়-সে বিষয়ে মুক্তি রানী বলেন, ‘যারা নতুন যাত্রী তারা অনেক ভয় পায়। অনেকে বলেন-আপু একটু সাবধানে যাবেন। আপনি চালাতে পারেন কিনা। আপনিই কি ড্রাইভার না অন্য কেউ।’
‘সারাদিন গাড়ি চালান না, সকাল আর বিকালে গাড়ি চালান’, বলেন মুক্তি রানী।
আশুলিয়ায় একটি পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করেন মুক্তি রানীর স্বামী তপন চন্দ্র বিশ্বাস। আশুলিয়ার উত্তর গাজীরচট (তালতলা) এলাকায় এক কক্ষের বাসায় থাকেন এই দম্পতি। তাদের এক ছেলে আর এক মেয়ে। ছেলে পড়ছে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর ছয় বছর বয়সী মেয়ে স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। ছেলে-মেয়েদের দাদার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাদের খরচ হিসেবে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পাঠান।