ঈদে কী খাবেন, কী খাবেন না 


ঈদের সময়গুলোতে ঘরে-ঘরে ভরপুর খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকে। ভোজনরসিক বাঙালির তাই ঈদ এলে আনন্দ একটু বেড়েই যায়৷ এই সময়ে খাবারের প্রকারভেদ ও পরিমাণ দুটোই অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা না চাইলেও মনের অজান্তে হয়তো কিছু খাবার বেশি খেয়ে ফেলি। বিশেষ করে মাংস ও মাংস দিয়ে তৈরি খাবারগুলো, যেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। 

মানুষের শরীরের দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন পরিমাণমতো খাওয়া উচিত। ঈদ এলে মূলত তেল বা তেল জাতীয় মাংস এবং শর্করা বেশি মাত্রায় খাওয়া হয়, যেখানে ভিটামিন বা খনিজ পদার্থগুলোর চাহিদা মাত্রা পূরণ হয়না। ৪৫ ঊর্ধ্ব বয়সী, রোগী ও নারী এবং পুরুষভেদে মাংস, তেল, চর্বিজাতীয় খাবারের পরিমাণও ভিন্ন। 

যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি। তাদের বয়স ৪০ এর বেশি হয়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। খারাপ কোলেস্ট্রেরল রক্তের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয় যাতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। তাই বয়স ৪০ হয়ে গেলে তেল-চর্বির দিকে লাগাম টানতে হবে। পরিমিত মাংসের সাথে থাকতে পারে সবুজ শাকসবজি। 



দিনে কী পরিমাণ মাংস খাওয়া উচিত?
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে
প্রতিটি মানুষের শরীরের বৈশিষ্ট্য আলাদা, তাই খাবারের চাহিদাও আলাদা। ধরা যাক, একজন স্বাভাবিক ওজন ও উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তার ওজন ৭৫ কেজি হলে তিনি সারা দিনে মাংসের গুণগতমানভেদে ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে সেটা একেবারে না খেয়ে সারা দিনে তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতিবেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।

রোগীদের ক্ষেত্রে
বাড়িতে যদি কোনো কিডনি রোগী থাকেন, তাহলে তার জন্য খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তার প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হবে ঈদের সময়। তাই কিডনি আক্রান্ত ব্যক্তি মাংস খাবেন খুবই কম পরিমাণে। সে ক্ষেত্রে গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া উত্তম। মাংস দিয়ে তৈরি খাবার সীমিত পরিমাণে দিতে হবে। এর বাইরে ডাল ও বিচিজাতীয় খাবার বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে। 
অনেকের আবার গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। আপনার যে যে খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেগুলো অবশ্যই বাদ দিতে হবে।

বাসায় যদি কোনো হৃদ্‌রোগের বা ডায়াবেটিসের রোগী থাকেন, সে ক্ষেত্রেও আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ঈদের দিনেও তাঁদের খাদ্যতালিকা মেনেই রান্না করুন। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিতে হবে। কারও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে বা রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও গরু, খাসির মাংসের পরিবর্তে চামড়াছাড়া হাঁস-মুরগির মাংসই উত্তম।

বাসায় যদি কোনো হৃদ্‌রোগের বা ডায়াবেটিসের রোগী থাকেন, সে ক্ষেত্রেও আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ঈদের দিনেও তাঁদের খাদ্যতালিকা মেনেই রান্না করুন। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিতে হবে। কারও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে বা রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও গরু, খাসির মাংসের পরিবর্তে চামড়াছাড়া হাঁস-মুরগির মাংসই উত্তম।

অনেকে প্রশ্ন করেন, হার্টের রোগী বা যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বেশি বা যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁরা কি কোনোভাবেই ঈদের দিনে একটু কোরবানির মাংস খেতে পারবেন না? বিষয়টি খুব আবেগময়। পরিবারের লোকজনও চায়, অসুস্থ ব্যক্তিরা অন্তত এক দিন একটু রেডমিট খাক। সে ক্ষেত্রে নিচের শর্তগুলো মেনে খেতে হবে :



•মাংসের গায়ে কোনো চর্বি লেগে থাকা যাবে না।
•ঝোল ছাড়া খেতে হবে। প্রয়োজনে টিস্যু দিয়ে মুছে বা ধুয়ে খেতে হবে।
•পরিমাণে কম খাবেন।
•দুপুর বা তার আগে খাবেন, কখনোই দুপুরের পরে খাবেন না।
•খাওয়ার পরে বিশ্রামে থাকবেন।
•ছোট ছোট টুকরো করে কেটে রান্না করবেন।
•রান্না মাংস না খেয়ে গ্রিল করে খান।

যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্যও গরু ও খাসির মাংস খেতে নিষেধ করা হয়। তবে আপনার যদি অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকে, তাহলে আপনিও ওপরের শর্তগুলো মেনে পরিমিত পরিমাণে মাংস খাবেন।

কম তাপে, কম সময়ে রান্না করলে মাংসের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। সে ক্ষেত্রে খোলা পাত্রে রান্না না করে, ঢাকনাযুক্ত পাত্রে মাংস রান্না করুন। গরুর মাংসের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেদ্ধ হতে দেরি হওয়া, তাতে রান্নায় সময় লাগে বেশি। সে ক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে এক টুকরো পেঁপে বা আনারস দিতে পারেন। অথবা রান্নার কয়েক ঘণ্টা আগে মেরিনেট করে রেখে দিন, তাতে মাংস কম সময়ে সেদ্ধ হবে।

৪৫ বছরের পর মাংস খাওয়া কমাতে হবে। হয়তো আগে সপ্তাহে দুই দিন মাংস খেতেন, এখন এক দিন খাবেন। মাংসের পরিমাণ আপনার বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়ার বিষয়ে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।

এক দিন বেশি খেলে কিছু হয় না
এ ধরনের ভাবনা না ভাবাই ভালো। বেশি খেলে বেশি ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করবে। সুস্থ থাকতে সে ক্যালরি ঝরাতে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয় না। ফলে এক দিন বেশি না খেয়ে প্রতিদিনই পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া ভালো।





Source link: https://www.ittefaq.com.bd/640794/%E0%A6%88%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%C2%A0

Sponsors

spot_img

Latest

Manchester City’s Jude Bellingham pursuit threatened by Premier League charges

De Bruyne, the midfield talisman behind four league titles, turns 32 in June and City - who like to plan their windows 18...

Shopping for Holiday Decor? I’m Sharing 24 of My Favorite Decorations in 2023 | Wit & Delight

The holiday season is here, and I’m doing things differently for our 2023 holiday decor. Since we moved into our home in 2020,...

Congress is reportedly limiting staff use of AI models like ChatGPT

Congress apparently has strict limits on the use of ChatGPT and similar generative AI tools. Axios claims to have obtained a memo from...

Thunder can’t complete season sweep in 127-105 loss to Clippers

The Oklahoma City Thunder failed to complete the season series sweep against the LA Clippers in a 127-105 loss.Thanks to Kawhi Leonard going...

Why Did Fox News Agree to the Massive Dominion Settlement?

Fox News’s $787.5 million settlement agreement with Dominion Voting Systems is a hefty chunk of change. It’s one of the largest defamation payout ever...