পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণের কাছ থেকে ‘মূল’ তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই অঞ্চলের সাবেক গভর্নর সত্যপাল মালিক। পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চার বছর আগে ২০১৯ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আধাসামরিক বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্য নিহত হন। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দ্য ওয়্যারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সত্য পাল জানান, এটা বোধগম্য যে মোদি তার সরকার ও বিজেপির সুবিধার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করতে এই আক্রমণকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদির চোখের সামনে দুর্নীতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিন্তে বলতে পারি, দুর্নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সমস্যা নেই।’ পুলওয়ামা হামলার সময় এবং সেই বছরের আগস্টে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সময় মালিক এই অঞ্চলের গভর্নর ছিলেন।
সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাশ্মির সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গাফিলতি নিয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করেছিলেন। পুলওয়ামায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের গাড়িবহরে হামলা সিআরপিএফ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘অযোগ্যতা’ এবং ‘অসাবধানতার’ ফল।
সিআরপিএফ কীভাবে বিমানটিকে তাদের কর্মীদের পরিবহন করতে চেয়েছিল তার বিশদ বিবরণ দিয়েছিলেন মালিক। তিনি জানান, সিআরপিএফ এর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোনে এ বিষয়ে চুপ থাকতে বলেছেন। শুধু তিনিই নন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও আমাকে চুপ করে থাকতে এবং এ বিষয়ে কথা না বলতে বলেছেন। আমি সব কিছু বুঝতে পেরেছি। মোদির উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানকে দোষারোপ করে সরকার ও বিজেপির জন্য নির্বাচনী সুবিধা অর্জন করা।’
মালিক আরও দাবি করেছেন, পুলওয়ামার ঘটনায় গুরুতর গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল। ৩০০ কেজি আরডিএক্স বিস্ফোরক বহনকারী গাড়িটি সীমান্তের ওপার থেকে এসেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু ১০-১৫ দিন ধরে গাড়িটি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের রাস্তা ও গ্রামে ঘুরে বেড়ায়।
কেউ এটিকে শনাক্ত করতে পারেনি। মেহবুবা কেন মুফতিকে নতুন সরকার গঠনের অনুমতি দেননি তাও ব্যাখ্যা করেছেন মালিক। ৮৭ সদস্যের বিধানসভায় মুফতি ৫৬টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিলেন।
মেহবুবা মুফতিকে মিথ্যেবাদী আখ্যায়িত করে মালিক বলেন, ‘ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো দল, যাদের সঙ্গে মেহবুবা জয়ের দাবি করেছেন, তারা আলাদাভাবে আমাকে বিধানসভা ভেঙে দিতে বলেছে। প্রধানমন্ত্রী কাশ্মির সম্পর্কে অজ্ঞ। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।
তাকে অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে।’