অপহরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য আতিক আহমেদ ও তার ভাইকে শনিবার (১৫ এপ্রিল) লাইভ টিভিতে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলি বর্ষণের পরপরই তিন হামলাকারী নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দ্রুত আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। খুনিদের দাবি, অপরাধের দুনিয়ায় বিখ্যাত হওয়ার জন্যই এই হামলা। পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১৬ এপ্রিল) পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিন খুনি স্বীকার করেছে, তারা আতিক ও তার ভাই আশরাফকে অনেক আগেই হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। হামলার জন্য তিনজন ভুয়া প্রেস কার্ড তৈরি করেছে।
শনিবার হাতে বুম ও ক্যামেরা নিয়ে অন্যান্য সাংবাদিকদের ভিড়ে যোগ দেন তারা। সকাল থেকেই আতিক ও আশরাফের সঙ্গে ছিলেন হিটম্যান লাভলেশ তিওয়ারি, সানি ও অরুণ মৌর্য। তারা আগেই জানতেন, আতিক ও তার ভাই, যারা রোববার পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন, তাদের মেডিকেল পরীক্ষার জন্য প্রয়াগরাজের মতিলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
সকাল থেকেই আতিকের গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল তারা। তারা পুলিশকে জানায়, আতিককে হত্যা করে তারা অপরাধ জগতে বিখ্যাত হতে চেয়েছিল। এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ ঘটনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রয়াগরাজের বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে। রাজ্য প্রশাসন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে আতিককে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
রাত ১০টার পর স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সাংবাদিক পরিচয়ে পুলিশের সামনেই আতিক ও তার ভাই আশরাফকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ঘাতকরা। তারা স্লোগানও দেয়। দৃশ্যটি একাধিক টিভির লাইভ ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
ঘটনার সময় আতিকের আইনজীবী বিজয় হাসপাতালের সামনে ছিলেন। তিনি জানান, পুলিশ তাদের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গাড়ি থেকে নামিয়ে আনছিল। তারা হাসপাতাল চত্বরে প্রবেশ করে গুলির শব্দ শুনতে পান। বিধায়ক ও তার ভাইকে গুলি করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলো। রাজ্যের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী ও অখিলেশ সিং যাদবও এর নিন্দা করেছেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে উমেশ পাল হত্যা মামলার আসামি আতিকের ছেলে আসাদ পুলিশের সঙ্গে ‘ক্রসফায়ারে’ মারা যান।