করোনা মহামারিতে জনরোষের মুখে পড়েছিলেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সম্প্রতি করা এক মন্তব্যের জেরে বিদেশ সফরে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়েছেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
লুলার পাঁচ দিনের পর্তুগাল সফর শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। এদিন তিনি লিসবন পৌঁছানোর সময় সেখানে ইউক্রেনের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেন ইউক্রেনের নাগরিকেরা। এ সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইউক্রেনীয়দের যুদ্ধবিরোধী পতাকা নাড়তে দেখা যায়। যুদ্ধের নৃশংসতার ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ডও ছিল তাদের হাতে।
ইউক্রেন ও রাশিয়াকে একই চোখে দেখায় লুলার সমালোচনা করেছে ইউক্রেন। তবে মন্তব্যের জেরে সমালোচনা শুরুর পর লুলার স্বর কিছুটা নিচু হয়েছে। তিনি ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করার জন্য রাশিয়ার নিন্দা করেছেন। একই সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে পুনরায় মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৩ ও ২০১০ সালের দুই মেয়াদের মতো এবারও লুলা বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে ব্রাজিলের অবস্থান তৈরি করতে চান। তাঁর এই লক্ষ্যকে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কারণ, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে লুলা বাস্তববাদী ও স্বাধীন কূটনীতির সূচনা করেছিলেন, যাতে মার্কিন আধিপত্যের সময়েও ব্রাজিলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় প্রাধান্য পেয়েছিল। এ ছাড়া বহুমুখী বিশ্ব গড়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনে শান্তি আলোচনা শুরু করতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার একটি প্রস্তাব এ মাসের শুরুতে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন। লুলা তাঁর প্রস্তাবে যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়।
লুলার প্রস্তাবের জবাবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো ফেসবুকে বলেছেন, ইউক্রেনের এক সেন্টিমিটার জমিও তুলে দেওয়ার কোনো আইনি, রাজনৈতিক বা নৈতিক কারণ নেই। ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর জন্য যেকোনো মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত।